প্রকাশিত হয়েছেঃ ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪ সময়ঃ ৮:৪৪ অপরাহ্ণ
রফিকুল ইসলাম খান, গফরগাঁও প্রতিনিধি।।
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণের টাকা জমা দিয়েও পরীক্ষা দিতে পারছে না ১৪ পরীক্ষার্থী।
উপজেলার মুখী পল্লীসেবক বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২২ জন শিক্ষার্থীর সাথে এমন ঘটনা ঘটে। পরে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ৮ জনের প্রবেশপত্র ব্যবস্থা করে দিলে তারা পরীক্ষায় অংশ নেয়। গতকাল বৃহষ্পতিবার সকালে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন বঞ্চিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে ওই ২২ পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করেন। পরে বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যালয়ে গিয়ে ওই পরীক্ষার্থীরা জানতে পারেন তাদের প্রবেশপত্র আসেনি। এরপর পরীক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককে প্রবেশ পত্র দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ওই সময় প্রধান শিক্ষক চাপের মুখে শিক্ষার্থীদেরকে বলেন বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পরীক্ষার আগেই প্রবেশপত্র আসবে। কিন্তু পরীক্ষা চলার আগ মুহুর্তে প্রধান শিক্ষক মোবাইল বন্ধ করে রাখেন।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি, ২২ জনের মধ্যে ৮ জনের ছবি ও গ্রুপের সমস্য হয়েছে। তাদের প্রবেশপত্র সকালে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই পেয়ে যাবে। বাকি ১৪ জন এ বছর আর পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। এমন পরিস্থিতিতে ওই ১৪ জন পরীক্ষার্থী বৃহস্পতিবার গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রবেশপত্র না পাওয়া ২২ শিক্ষার্থী যথাসময়ে তাদের রেজিস্ট্রেশন ফিস ও পরে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণের সমুদয় অর্থ পরিশোধ করেন। সে সময় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের ফরম পূরণ হয়েছে বলে তাদের জানান। কিন্তু বুধবার বিদ্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষার্থীরা জানতে পারে তাদের রেজিস্ট্রেশনই হয়নি। ফলে তাদের প্রবেশপত্র আসেনি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ , রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়েও তাদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি, এ ঘটনার দায় কে নিবে।
এ ব্যাপারে পরীক্ষার্থী মাহবিয়া আক্তার রিয়া, মেঘলা সুলতানা , মিথিলা বেগম ও মেহেদী হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ’আমাদের প্রধান শিক্ষক সহ অন্যরা আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে। রেজিস্ট্রেশন ও ফরম পূরনের জন্য ফি নিয়েছেন। এখন বলা হচ্ছে আমাদের রেজিস্ট্রেশনেই হয়নি। প্রতারনার কারণে আমাদের জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে যাবে তা মেনে নিতে পারছি না।
অপর পরীক্ষার্থী জিহাদ আল আবিদের বাবা আব্দুল জলিল অভিযোগ করে বলেন , ’গত মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান আপনার ছেলের ফরম পূরণ হয়নি। কারণ হিসেবে আমাকে বলা হয় তার রেজিস্ট্রশন হয়নি। তিনি দায়ীদের বিচার ও শাস্তি দাবী করেন।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান বৃহস্পতিবার পরীক্ষা শেষে (১৫ই ফেব্রুয়ারী) অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, ’আমাদের আইসিটি শিক্ষক মো. রেজাউল করিমের ভুলে এমন ঘটনা ঘটেছে। এখন ১৪ শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় তারা আর পরীক্ষা দিতে পারবে না। বাকি ৮ জনের ছবি ও গ্রুপের ভুল ছিল তা সমাধান হয়ে গেছে।’ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ’প্রথমে ২২ পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র পায়নি বলে জেনেছি। সর্বশেষ জানতে পেরেছি ১৪ জন প্রবেশপত্র পায়নি। তাদের কারোর রেজিস্ট্রেশন ছিলনা বলে আমাকে জানানো হয়েছে। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ ফরম পূরণের জন্য কেনো টাকা নিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।