প্রকাশিত হয়েছেঃ ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪ সময়ঃ ১০:১২ অপরাহ্ণ

রফিকুল ইসলাম খান, গফরগাঁও প্রতিনিধি।।
গর্ভধারিনী মায়ের চাইতে আপনতো আর কেউ নেই। সেই মায়ের লাশ বাড়িতে রেখেই দাখিল পরীক্ষা অংশ গ্রহণ করেছে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার মুখী শাহ মিসকিন দাখিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী দিহান আলম। গত মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঘটে এ হৃদয় বিদারক ঘটনা। সে উপজেলার পাগলা থানাধীন মশাখালী ইউনিয়নের বেলাব গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
মঙ্গলবার রাত ১২ টা দিকে দাখিল পরীক্ষার্থী দিহান আলমের মা খাদিজা বেগম (৩৫) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। তিনি  বেশ কিছুদিন যাবত উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন।
পরীক্ষার হলে যেতে ছেলেকে নিজ হাতে তৈরি করে দিবেন মমতাময়ী মা। তারপর ভালোবাসা ও দোয়া দিয়ে পরীক্ষার হলে পাঠাবেন ছেলেকে। এটাই ছিল স্বাভাবিক চিত্র। কিন্তু দিহানের ভাগ্যে তা আর হয়নি। সকালের আগেই রাতেই পৃথিবী থেকে চিরকালের জন্য পরপারে চলে গেলেন জনম দুখিনী মা।
গতকাল বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই মায়ের লাশের পাশে দিহান বসে থাকে। পরীক্ষায় রেজাল্ট ভালো করতে হবে, মায়ের এই কথা মনে পড়তেই সেই মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে কাঁদতে কাঁদতে গফরগাঁও জে. এম. কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান।  ১৫ নম্বর কক্ষে হাদিস বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে দিহান আলম। পরীক্ষা দেয়ার সময় বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ে। তবে সহপাঠী ও পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়োজিত শিক্ষক এবং কেন্দ্র সচিব এর সহযোগিতায় সে পরীক্ষা অংশ গ্রহণ করে।
এদিকে তার মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে মুখী শাহ মিসকিন দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ আশরাফ উদ্দিন কেন্দ্রে ছুটে যান এবং দিহানের খোঁজ খবর নেন।
গফরগাঁও জে এম কামিল মাদরাসার কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আতাউর রহমান বলেন, পরীক্ষার হলে ছেলেটির বারবার চোখ মুছার কারণ জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর ছেলেটিকে সান্ত্বনা দিয়ে পরীক্ষা দিতে উৎসাহ দেন।
পুরো তিন ঘন্টাই পরীক্ষা দিয়েছে ওই পরীক্ষার্থী। চোখের পানি নিয়ে পরীক্ষা দিতে এলেও পরীক্ষা ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছে দিহান। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরে দিহান বাদ আসর মায়ের জানাজাসহ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করে।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com