প্রকাশিত হয়েছেঃ জানুয়ারি ১৩, ২০২৫ সময়ঃ ৭:৫২ অপরাহ্ণ

Spread the love

জালালুর রহমান, মৌলভীবাজার।।

চুঙ্গার ভেতরে বিরইন চাল, দুধ, চিনি, নারিকেল ও চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরী  করা হতো চুঙ্গাপুড়া পিঠা। পিঠা তৈরী হয়ে গেলে মোমবাতির মতো চুঙ্গা থেকে পিঠা আলাদা হয়ে যায়। ঢলু বাঁশের চুঙ্গা দিয়ে তৈরি এ পিঠা চুঙ্গাপুড়া পিঠা নামে বিখ্যাত। এলাকার অন্যতম ঐতিহ্য এ পিঠা কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে। ঢলু বাঁশ ছাড়া চুঙ্গা পিঠা তৈরী  করা যায় না। ঢলু বাঁশে এক ধরনের তৈলাক্ত রাসায়নিক পদার্থ আছে, যা আগুনে বাঁশের চুঙ্গাকে না পোড়াতে সাহায্য করে। ঢলু বাঁশে অত্যাধিক রস থাকায় আগুনে পোড়ে না এটি, ভেতরের চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি পিঠা আগুনের তাপে সিদ্ধ হয়। চুঙ্গা পিঠা পোড়াতে খড়- নেড়া দরকার পড়ে। আগের মতো এখন আর গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে এ পিঠার দেখা মিলে না। পাহাড়ে এ বাঁশ নেই বলে বাজারে ঢলু বাঁশের দামও এখন বেশ চড়া। ব্যবসায়ীরা দূরবর্তী এলাকা থেকে এই ঢলুবাঁশ ক্রয় করে নিয়ে যান নিজ নিজ এলাকার বাজারগুলোতে বিক্রির জন্য। প্রতিবছরের ন্যায় মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ঐতিহ্যবাহী বিরাট মাছের মেলা বসে। সেই মেলা থেকে মাছ কিনে কিংবা হাকালুকি, হাইল হাওর ও নদী থেকে বড় বড় রুই, কাতলা, চিতল, বোয়াল, পাবদা, কই, মাগুর মাছ ধরে নিয়ে এসে হালকা মসলা দিয়ে ভেজে (আঞ্চলিক ভাষায় মাছ বিরান) দিয়ে চুঙ্গাপুড়া পিঠা খাওয়া ছিল মৌলভীবাজার ও সিলেটের অন্যতম ঐতিহ্য। চুঙ্গা পিঠা তৈরীর প্রধান উপকরণ ঢলু বাঁশ ও বিরইন ধানের চাল। এ ধান এখন আর আগের মতো চাষাবাদও হয় না। জুড়ীর লাঠিটিলা ফুলতলা, সাগরনাল ও চুঙ্গাবাড়িতে প্রচুর ঢলু বাঁশ পাওয়া যেত। তন্মধ্যে চুঙ্গাবাড়ী এক সময় প্রসিদ্ধ ছিলো ঢলু বাঁশের জন্য। বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাওয়ায় ফলে হারিয়ে গেছে ঢলু বাঁশ। ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম
সেলু জানান, আগে কম-বেশি সবার বাড়ীতে ঢলু বাঁশ ছিল। এখন সেই বাঁশ আগের মতো নেই। এ বাঁশ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আগেকার যুগে ঘরে ঘরে শীত মৌসুমে সেই বাঁশ দিয়ে চুঙ্গাপুড়ার ধূম লেগেই থাকতো।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com