প্রকাশিত হয়েছেঃ জানুয়ারি ৪, ২০২৫ সময়ঃ ৪:৪৯ অপরাহ্ণ
মোঃ জাকির হোসেন, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি।।
ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানাধীন পিঠাসুতা গামী পাকা রাস্তার পাশ থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার ব্যবসায়ী মোঃ আরিফুর রহমানের লাশ উদ্ধার হওয়ায় ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মাদারীপুর জেলার শিবপুর থানার শিবচর গ্রামের আশিকুর রহমান (৩৫), ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার কুমারগাতি গ্রামের রাহাত হোসেন তন্ময় (২৫), তারাকান্দা উপজেলার রূপচন্দ্রপুর গ্রামের এহতেশামুল হক নিশাত (২৫) এবং রংপুর সদরের গনেশপুর গ্রামের পরশ চৌধুরী শ্রাবণ (২৯)। শুক্রবার ময়মনসিংহের দাপুনিয়া খেজুরতলা মোড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপরাধে ব্যবহৃত হাইস গাড়টি আলামত হিসেবে ঢাকা থেকে জব্দ করেন। ময়মনসিংহ পিবিআই এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গত ১লা জানুয়ারী সকাল ১০ টায় থানা পুলিশের মাধ্যমে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা সংবাদ পায় তারাকান্দা থানাধীন পিঠাসুতাগামী পাকা রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে আছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ডিজিটাল ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে।
জানা যায় অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তির নাম মোঃ আরিফুর রহমান (৪৬) তার বাড়ি লক্ষীপুর জেলায়। পিবিআই ময়মনসিংহ জেলা থানা পুলিশের মাধ্যমে খবরটি নিহতের পরিবারকে জানিয়ে দেয়। উক্ত ঘটনায় থানা পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি পিবিআই ময়মনসিংহ ছায়া তদন্ত শুরু করে। নিহতের স্ত্রী আয়শা আক্তার বাদী হয়ে তারাকান্দা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
থানা পুলিশের তদন্তকালে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা স্বউদ্যোগে মামলাটি অধিগ্রহণ করে।
পিবিআই টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকান্ডে জড়িত অজ্ঞাত আসামীদের পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হন। গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারী) বেলা ৩ টায় ময়মনসিংহের কোতয়ালী থানাধীন দাপুনিয়া খেজুরতলা মোড় এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে।
এ বিষয়ে পিবিআই আরও জানান, আসামীরা অপহরণ চক্রের সদস্য। আসামী শ্রাবণ ঢাকায় অবস্থানরত লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার ৬নং পূর্ব কেরোয়া ইউনিয়নের রানিং মেম্বার ও ফার্ণিচার ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান এর তথ্য সংগ্রহ করে এবং তাকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা সাজায়। গত ২৫ ডিসেম্বর আসামী শ্রাবণ ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে আসে এবং কয়েক দিন অবস্থান করে। এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ হতে তার বন্ধু তন্ময় ও নিশাতকে নিয়ে মিরপুর চলে যায়। সেখানে গিয়ে শ্রাবণ সুকৌশলে ভিকটিম আরিফুর রহমানকে মিরপুর-১ নম্বর এলাকা থেকে ডেকে নেয়। ভিকটিম আরিফুর রহমান সেখানে আসামাত্রই আসামী শ্রাবণ, আশিক, তন্ময় ও নিশাত মিলে তাকে ধরে ফেলে এবং প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে তাদের পূর্ব হতেই ভাড়া করে রাখা হাইস গাড়ীতে উঠতে বলে। আরিফুর রহমান গাড়ীতে উঠামাত্রই তারা ময়মনসিংহের দিকে রওনা করে। আসামীরা জিম্মি আরিফুর রহমানের ফোন দিয়ে তার স্ত্রীর কাছে কল করায় এবং টাকা পাঠানোর জন্য এসএমএস করায়। বিকাশ নম্বর হিসেবে আসামী আশিকের একটি নম্বর দেয়। গাজীপুরে জ্যামে গাড়ী আটকে গেলে ভিকটিম নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করলে আসামীরা অপহরণের বিষয়টি যাতে প্রকাশ না পায় সে জন্য ভিকটিমকে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে আসামীরা ভিকটিমকে হত্যা করে তারাকান্দার পিঠাসুতাগামী পাকা রাস্তার পাশে ধানক্ষেতে ফেলে রেখে আসে।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত সকল আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সকল আসামী বিজ্ঞ আদালতে নিজেদের সম্পৃক্ত করে ঘটনার বিবরণ উল্লেখপূর্বক ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।