প্রকাশিত হয়েছেঃ অক্টোবর ১৮, ২০২৪ সময়ঃ ৬:৩৩ অপরাহ্ণ
গাজীপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক।।
আওয়ামী লীগপন্থী স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের (স্বাচিপ) গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতির সাথে কথিত সমন্বয়কদের রুদ্ধদ্বার গোপন বৈঠক নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। টঙ্গী সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এÐ কলেজের নিচ তলায় কনফারেন্স রুমে গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ওই গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্র-জনতার গত ৫ আগস্টের বিজয়ের পর থেকে পদত্যাগের জন্য চাপের মুখে আছেন টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ অধ্যক্ষ ও স্বাচিপ গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতির আলাউদ্দিন মিয়া। তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকা লুপাটের অভিযোগ রয়েছে। তাকে অপসারণের জন্য অভিভাবক, সাধারণ শিক্ষক ও এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসকের কাছে একাধিক আবেদনও পড়েছে। ইতিপূর্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা পদত্যাগের দাবিতে তাকে কয়েক দফা ঘেরাও করেছিল।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারের সাথে মতবিনিময় সভার নামে অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন নিজের ছেলেকে দিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে টঙ্গী সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজের চার তলার হলরুমে ওই ‘মতবিনিময়’ সভার আয়োজন করেন। নিজের ছেলেকে সমন্বয়ক সাজিয়ে এ সভার আয়োজন করায় এলাকায় তোলপাড় চলছে। কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসান আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের নাম ভাঙ্গিয়ে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তারা ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলেও প্রচার করা হয়। কিন্তু তারা না আসায় অবশেষে সকলের কাছে পরিষ্কার হয়, আওয়ামী পন্থী দুর্নীতিবাজ দুই জন অধ্যক্ষকে রক্ষায় এ ‘মতবিনিময়’ সভার আয়োজন করা হয়।
টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া এবং টঙ্গী সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামানকে পদত্যগের জন্য ছাত্র আন্দোলন গত ৫ আগস্টের পর থেকে দাবি জানিয়ে আসছে। অধ্যক্ষ আলাউদ্দিনের ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যে দৈনিক নয়া দিগন্তসহ একাধিক সংবাদপত্রে তথ্যবহুল ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় তার পদত্যাগ যখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে ঠিক সেই মুহূর্তে নিজের ছেলেকে সমন্বয়ক সাজিয়ে বিতর্কিত এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন।
এদিকে পাল্টা সমন্বয়কগ্রæপ তৈরি করে এলাকায় বিশৃংখলা সৃষ্টিার পাঁয়তারা করায় অধ্যক্ষ আলাউদ্দিনকে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে। বিতর্কিত ওই অনুষ্ঠানে সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এÐ কলেজের সাবেক কয়েক জন ছাত্র ছাড়া বাকি সবাই ছিলেন বহিরাগত। যারা বেশির ভাগই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। অনুষ্ঠানকে গ্রহণযোগ্য করতে একজন বিশিষ্ট আলেমকেও সেখানে রাখা হয়।
কথিত মতবিনিময় সভা শেষে সফিউদ্দিন স্কুলের নিচ তলায় কনফারেন্স রুমে সমন্বয়কদের নিয়ে গোপন বৈঠক করেন অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া। এসময় একজন সাংবাদিক সেখানে ঢুকে ছবি তুলতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া হয় এবং ইতমধ্যে তুলা ছবি ডিলিট করতে বলা হয়। পরে ওই সাংবাদিককে বের করে দীর্ঘক্ষণ রুদ্ধদ্বার বৈঠক ও ভুরিভোজ চলে। অনুষ্ঠানে যাবতীয় খরচ বহন করেন অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া। এতে তিন শ’ বিরানির প্যাকেট বিতরণ করা ছাড়া সমন্বয়কদের জন্য আলাদা বিশেষ আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। ঢাকা থেকে মধ্যম সারির তিন জন সমন্বয়ককেও ভুল বুঝিয়ে ওই অনুষ্ঠানে আনা হয়। পরে অনুষ্ঠান শেষে ওই সমন্বয়কদের একজন লুৎফর রহমান একজন সাংবাদিকের সাক্ষাতকারে বলেন, আমাদের নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা জানতাম না ফ্যাসিবাদের দোসররা এ অনুষ্ঠানের আয়োজক।
এদিকে এব্যাপারে অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, সম্বয়করা আমাকে দাওয়াত করেছিল তাই সেখানে গিয়েছি। তাদের সাথে আমার কোন গোপন বৈঠক হয়নি।
#