প্রকাশিত হয়েছেঃ জানুয়ারি ১৪, ২০২৫ সময়ঃ ২:১০ অপরাহ্ণ

Spread the love

আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ)।।
জলাধার ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন থাকার পরও ওই আইনের তোয়াক্কা না করে ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রশাসনের নাকের ঢগায় একের পর এক ভরাট হয়ে যাচ্ছে খাল বিল ও জলাভূমি। যথাযথ মনিটরিং বা নীতিমালাগুলো কঠোভাবে প্রয়োগ না  হওয়ায় এমনকি প্রশাসনের রহস্যজনক নিরবতার কারণে ভূমির অবস্থার পরিবর্তন হয়ে হুমকীর মুখে পড়ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে পরিবেশবিদ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ভরাডোবা এলাকায় অবস্থিত এককালের ঐতিহ্যবাহি নিশিন্দা বিলটির কিছু অংশ মাটি ও বালি দিয়ে ভরাট করে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এক বছর ধরে উপজেলার গোয়ারী গ্রামে উইন্ডি গ্রæপের সাইনবোর্ড টানিয়ে স্থানীয় গারোইল ও দোইল্লা বিলটি ভরাট করে চলেছেন প্রভাবশালীরা। এতে সরকারী খাস জমি বেহাতসহ মাটি আনা নেয়ার কারণে ভালুকা-গফরগাঁও হাইওয়ে সড়ক, ভালুকা বিরুনীয়া ও বাওয়া কংশেরকুল পাকা রাস্তা মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
এদিকে গত কিছুদিন ধরে মহাসড়কের পাশে উপজেলার ভরাডোবা বাসস্ট্যান্ডের অদূরে কিতোনখলা বিলটি বালি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। পাশাপাশি একই এলাকার গড়াইল ও কেচুরগুনা বিলটিও ভরাট করা হবে বলে ভরাটকারীরা জানান। এতে সরকারী খাসজমি বেহাতসহ ওই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে পরিবেশের চরম বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কলেজ পাড়া এলাকায় অবস্থিত আন্দা বিলটি প্রায়ই ভরাট হয়ে গেছে। ওই বিলে ১২৭১ নম্বর দাগে প্রায় তিন একর খাস ভূমি ছিলো। এ ব্যাপারে মামলা চলমান থাকলেও ভরাট কাজটি অব্যাহত আছে। উপজেলার কাশর, গৌরিপুর এলাকায় এস আলম গ্রæপের মালিকানাধিন ইউনিভার্সেল নামে একটি প্রস্তাবিত কারখানার নামে ভরাট লাউতি খালের অনেকাংশ ভরাট করা হয়েছে। তাছাড়া পাড়াগাঁও এলাকায় বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং ধামশুর গ্রামে অবস্থিত সিংগারবিলটি সানি পোল্ট্রি ফিট কোম্পানী ও বিলটির উজানে শেখ জহিরউদ্দিন সিএনজি কর্তৃপক্ষ অনেকাংশই মাটি ও বালি দিয়ে ভরাট করে ফেলেছেন। তাছাড়া বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দু’পাশে ভালুকা অংশে বেশ কয়েকটি খালসহ জলাশয়গুলো ভরাট করে প্রভাবশালীরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে ফেলেছেন।
ভরাডোবার কিতোনখলা বিল ভরাটে বালি সরবরাহকারী জনৈক মফিজুল ইসলাম দুলু জানান, নাসির গ্রæপ বিলটি ভরাট করছে। তারা শুধু বালি সরবরাহ করেছন। এতে তারা প্রতি ফুট ৫০ পয়সা পেয়ে থাকেন। প্রায় ৪ কোটি ফুট বালি পড়বে বলে তিনি জানান।
সাইড ইঞ্জিনিয়ার মো: আরাফত জানান, বালি ফেলানোর বিষয়ে তিনি কোন তথ্য দিতে পারবেন না। উপর মহলের সাথে কথা বলে জানাবেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সদস্য সচিব কামরুল হাসান পাঠান কামাল জানান, গত কয়েক বছরে ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেক জলায়শয়, খাল ও বিল-ঝিল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। জলাশয় আইনটি কিছুটা দুর্বল হওয়ায় এমনকি সংশ্লিষ্ট বিভাগের যথাযথ তদারকি না থাকার কারনেই প্রভাবশালীরা যার যেভাবে ইচ্ছা ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করে চলেছেন। আর এসবের প্রতিবাদে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ভালুকা শাখার উদ্যোগে অনেকবার মানববন্ধন ও স্বাকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আবদুল্ল্যাহ আল মাহমুদ জানান, ভরাডোবা এলাকায় বিল ভরাটের বিষয়টি তার জানা নেই। তাছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জলাশয় ও খাল-বিল ভরাটের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্টাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।   ###

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com