প্রকাশিত হয়েছেঃ ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪ সময়ঃ ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ

মোঃ জাকির হোসেন, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি।।

ময়মনসিংহ নগরীর জয়নুল আবেদীন পার্কে মিশুক রিক্সা ছিনতাইয়ের জন্য খুন করা হয় চালক হাসেম(২৯) কে। নিহত হাসেম মিয়া ময়মনসিংহ সদর উপজেলার দাপুনিয়া কলাপাড়া এলাকার মৃত.জহির উদ্দিন ওরফে জহুর উদ্দিনের পুত্র। তিনি পেশায় মিশুক রিক্সা চালক ছিলেন।

হত্যাকান্ড সংঘটনের ৩৬ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কোতোয়ালী ও গৌরীপুর থানা এলাকা হইতে উক্ত হত্যাকান্ডে ঘটনায় সরাসরি জড়িত ৪ ঘাতকসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। লুন্ঠিত মিশুক রিক্সা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জেলার ফুলপুর উপজেলার আইনুদ্দিন এর পুত্র আলমগীর (২০), তারাকান্দা থানার কামারিয়া পূর্বপাড়া এলাকার নূর মোহাম্মদ এখলাছ উদ্দিনের পুত্র রাকিবুল হাসান তপু (৩০), হরিপুর এলাকার আব্দুল জব্বার এর পুত্র রাকিব হাসান ওরফে রাকিবুল ইসলাম (২১) এবং টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার রামপুর এলাকার জেহার আলী ওরফে মনির ড্রাইভারের ছেলে আরাফাত হোসেন বাবু (২৭)। মিশুক রিক্সা ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত আরো তিন জন, ফরহাদ (৩১), সুমন শেখ (৩৫) এবং আলম (৪০) সহ সত জনকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ কনফারেন্স রুমে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সুপার মাসুম আহমদ ভূঁইয়া এ তথ্য জানান,

তিনি জানান, গত শুক্রবার ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮ টায় ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী মডেল থানাধীন জয়নুল আবেদীন পার্ক সংলগ্ন সিভিল সার্জনের বাসভবনের উত্তর পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের কিনারায় হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাতনামা রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে অজ্ঞাতনামা এ লাশটিকে তার আত্মীয়-স্বজনগণ সনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কোতোয়ালী ও গৌরীপুর থানা এলাকা হতে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।

ধৃত আসামীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকান্ডে ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত মর্মে জানান। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গত ০৮/০২/২০২৪ তারিখ রাত ০৯.০০ ঘটিকার সময় ধৃত আলমগীর, রাকিবুল হাসান তপু, রাকিবুল, আরাফাত হোসেন বাবু ও পলাতক অপর একজন সহ মোট ০৫ জন একত্রে শম্ভুগঞ্জ ব্রীজ স্মৃতিসৌধের মাঠে বসে একটি অটো ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক অনুমান রাত ১২.০০ ঘটিকার সময় তারা শম্ভুগঞ্জ ব্রীজ হতে ভিকটিম হাসেমের মিশুক রিক্সা ভাড়া করে সার্কিট হাউজ মাঠে নিয়ে যায় যায়। তারপর সার্কিট হাউজ মাঠে দাঁড়িয়ে মিশুক রিক্সা চালক হাসেমের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তারা এলোপাথাড়ি মারপিট করে বেড়িবাঁধের নিচে নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। ধৃত আলমগীরের কোমরে পরিহিত বেল্ট দিয়ে ধৃত রবিন ভিকটিমের পা বাঁধে এবং গেঞ্জি দিয়ে আরাফাত হোসেন বাবু ভিকটিমের হাত বাঁধে। আরাফাত হোসেন বাবু ভিকটিম হাসেমের পরিহিত চাদর দিয়ে তার মুখ বাঁধে এবং সবাই মিলে তাকে মাটিতে চেপে ধরে রাখে। এরপর আরাফাত হোসেন বাবুর পকেটে থাকা চাকু দিয়ে পলাতক রবিন ভিকটিমের বুকে ও পেটে একাধিক আঘাত করে এবং তাকে মাটিতে ফেলে রেখে সবাই দ্রত ভিকটিমের মিশুক রিক্সাটি নিয়ে শম্ভুগঞ্জ ব্রীজ এলাকায় গিয়ে ধৃত আলমের কাছে নগদ ৩৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। পরে মিশুক বিক্রির টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে।

ধৃত আসামী মোঃ আলমগীর (২০)-এর বিরুদ্ধে ০১টি হত্যা মামলা, মোঃ রাকিবুল হাসান তপু (৩০)-এর বিরুদ্ধে  ০১টি হত্যা মামলা, মোঃ রাকিব হাসান ওরফে রাকিবুল ইসলাম (২১) এর বিরুদ্ধে ০১টি চুরি মামলা, মোঃ আরাফাত হোসেন বাবু (২৭) এর বিরুদ্ধে ০১টি হত্যা ও ০১ টি চুরি মামলা  রয়েছে। উল্লেখ্য, রাকিবুল ইসলাম তপু চরপাড়া মেডিকেল এর সামনে সংঘটিত শরিফ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী ছিলেন। উক্ত মামলায় তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছিলেন  এবং ১৯ মাস জেলে থেকে গত ০২ মাস আগে জামিনে বের হন। পলাতক আসামী গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com