প্রকাশিত হয়েছেঃ ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩ সময়ঃ ৯:১১ পূর্বাহ্ণ

মোঃ সিরাজুল মনির বিশেষ প্রতিনিধি।।

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনিতে দীর্ঘ ৪ যুগের ও বেশি সময় ধরে অবকাশ নামক স্থানে একটি পিকনিক স্পর্ট গড়ে উঠে। পরবর্তিতে তৎকালিন সময়ের জেলা প্রশাসক আব্দুস সালামের উদ্যেগে আধুনিকায়নে আদলে গড়ে তুলার উদ্যেগ গ্রহন করেন। এর পর থেকে দেশের দূর দুরান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসুরা ছুটে আসে উক্ত পিকনিক স্পটে। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীরা এই গজনি অবকাশে বেড়াতে আসে। তবে প্রতি শুক্রবারে দেশের দূর দুরান্ত থেকে শত শত পরিবহনে হাজার হাজার লোক আসায় উপচে পরে উক্ত অবকাশ পিকনিক স্পটটিতে। তাই জেলা প্রশাসনের উদ্যেগে গজনির গারো পাহাড়ের ৯০ একর জমির ওপর গজনী অবকাশ কেন্দ্রটি গড়ে তুলেছে। এবং উক্ত পিকনিক স্পটটির নানা কারু কার্যে প্রকৃতির পরিবেশে নান্দনিক গজনি অবকাশ পিকনিক স্পটটি গড়ে তোলা হয়। প্রতিদিন গজনী অবকাশে পযর্টন কেন্দ্রে হাজারো প্রকৃতিপ্রেমীর পদভারে মুখরিত। পর্যটন ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন- মৌসুমের শেষে ব্যবসায় লাভবান হচ্ছেন। দূর-দুরান্তের পযর্টকরা বেশী আসছেন বলে জানান, ঝিনাইগাতী থানার ওসি মো. মনিরুল আলম ভূঁইয়াসহ সংশ্লিষ্টরা। প্রকৃতি প্রেমীদের ভিড়ে বনাঞ্চল ঘেরা গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্র এখন মুখরিত। সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও পর্যটকের ঢল নেমেছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আল মাসুদ।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নতুন দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত ব্রিজ, ক্যাবলকার, জিপলাইনিং, হ্রদের পাশে বোট ক্লাব ও আনন্দপার্ক পর্যটন কেন্দ্রে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। রয়েছে পাহাড়ে সুদীর্ঘ ওয়াকওয়ে। পাহাড়ের স্পর্শ নিয়ে লেকের পাড় হেঁটে যাওয়া পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। গারো মা ভিলেজেও ছোঁয়া লেগেছে নতুনত্বের। মাশরমি ছাতার নিচে বা পাখি বেঞ্চে বসে পাহাড়ের ঢালে উপজাতীয়দের বিচিত্র জীবনযাত্রা, দিগন্তজোড়া পাহাড়িদের ভিন্ন জীবনমান উপভোগ করার মত। শিশু দর্শনার্থীদের চুকুলুপি চিলড্রেনস পার্কের পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে শিশু কর্নার। প্রতিটি রাইডে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। চুকুলুপি চিলড্রেনস পার্ক সকাল থেকেই মুখরিত। শিশুদের ভিড় বাড়ায় পার্কের ফটকে লম্বা লাইন। পদচারণায় মুখরিত শিশুপার্কও। বিভিন্ন রাইডে চড়ে ও খোলামেলা পরিবেশে আনন্দে মেতে ওঠছে শিশুরা।
রাজধানী ঢাকা থেকে ভ্রমণ করতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থীরা বলেন, পর্যটন কেন্দ্রের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুবই আকৃষ্ট করছে। প্রকৃতি যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। রয়েছে পাহাড়ি, টিলা আর সমতল ভূমিতে সবুজের সমারোহ। শাল, গজারি, সেগুন, ছোট-বড় মাঝারি টিলা, লতাপাতার বিন্যাস দারুণ উপভোগ করছি। কত সুন্দর অপরূপ চাদর মোড়ানো পাহাড়।
 পাহাড়ের পাশ ঘেঁষেই ভারতের মেঘালয় রাজ্য।  পড়ন্ত বিকালে ছোট নৌকায় ঘুরতে রয়েছে নান্দনিক লেক। নৌকায় চড়ে পাহাড়ে কফি আড্ডা আর গান অন্যরকম অভিজ্ঞতা তৈরি করেছে। গজনি অবকাশে ঘুরতে এসে গারো পাহাড় ও পর্যটন কেন্দ্রে তৈরি প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো মনে আনন্দ দিয়েছে। নতুন রাইডগুলো স্থাপনের জন্য জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা। পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, বতর্মানে প্রচুর দর্শনার্থী আসছে। ফলে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হচ্ছি। পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশদারের ইজারাদার হান্নান সরকার বলেন, ছোট-বড় প্রায় তিন শতাধিক গাড়ি, মোটরসাইকেল এসেছে। ওইসব যানবাহনে হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটেছে। যেন গোটা পরিবেশই পাল্টে গেছে। উল্লেখ্য উক্ত পিকনিক স্পট থেকে প্রতি বছর সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় আসে।
ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল আলম ভূঁইয়া বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল, নিরাপত্তায় কোন সমস্যা নেই। পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.ফারুক আল মাসুদ বলেন, উপজেলা প্রশাসন দর্শনার্থীদের নির্বিঘ্নে এবং  নিরাপদে ঘোরাফেরার জন্য পোশাকে ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যগণ দায়িত্ব পালন করছেন। শতভাগ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। কোন পর্যটক যাথে এখানে ভ্রমনকালীন সময় কোন প্রকারের সমস্যার সমুক্ষীন না হয় তার দিকে আমাদের সবসময়ই নজর রয়েছে।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com