প্রকাশিত হয়েছেঃ অক্টোবর ২৩, ২০২৫ সময়ঃ ৬:৫৮ অপরাহ্ণ
মোঃ জাকির হোসেন, ময়মনসিংহ।।
ময়মনসিংহে পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় করণীয় শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের শহিদ শাহাবুদ্দিন মিলনায়তনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ বদিউজ্জামান খান, ময়মনসিংহের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক শেখ মোঃ নাজমুল হুদা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ) আসাদুজ্জামান এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোঃ হাবেজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর উদ্যোগে ও গ্রামীণ মানবিক উন্নয়ন সংস্থা (গ্রামাউস) এর সহযোগিতায় আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ গ্রামাউস-এর পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান। এছাড়াও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন মসজিদের শতাধিক ইমাম, এনজিও প্রতিনিধি, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এতে তথ্যবহুল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন পিকেএসএফ এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি ছাদেক আহমাদ। তিনি জানান, পিকেএসএফ কর্মসংস্থানের মাধ্যমে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বাড়ছে। এ অধিক জনসংখ্যার জন্য অধিক পরিমাণ খাদ্য, বাসস্থান ও কর্মসংস্থান প্রয়োজন। আমাদের চারপাশের বায়ু, মাটি, পানি ও জীবমণ্ডল নিয়েই আমাদের পরিবেশ। দূষণের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য যাতে নষ্ট না হয়, সে চেষ্টা করতে হবে। গ্রীনহাউজ গ্যাস যেমন কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইড জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী। আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে, বৃক্ষরোপণ করতে হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি বলেন, ন্যানোপ্লাস্টিক ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক পরিবেশের প্রচুর ক্ষতি করে। জমির অনুর্বরতা, ভারী ধাতব পদার্থের উপস্থিতি থেকে পরিবেশকে মুক্ত রাখতে হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক বলেন, প্রতিটি দপ্তরের প্রধানগণ, এনজিও প্রতিনিধি, ইমামগণ ও সাংবাদিক প্রত্যেককে নিজ নিজ আওতাধীন মানুষকে পরিবেশের সংরক্ষণ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে, অপচয় রোধ করতে হবে।
বাকৃবির অধ্যাপক ড. বদিউজ্জামান খান বলেন, যেভাবে পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় ১৭ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হবে এবং ৩০ শতাংশ কৃষি জমি নষ্ট হবে। বিজ্ঞানীরা জলবায়ু সহিষ্ণু ধানের জাত, লবণাক্ত সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। পরিবেশ দূষণের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হবে। এছাড়াও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়েও কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথি বলেন, মানুষ তার কর্মের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে পারে। আগে ঘর, তবে তো পর। আমাদের বাড়ির চারপাশের আঙিনা পরিষ্কার রাখতে হবে, বর্জ্য নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষায় বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব বোঝাতে হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি আগামীকাল কিয়ামত হয়, তবুও আজ একটি চারা গাছ লাগাও।’ মানুষের
অতিলোভ ও মাত্রাতিরিক্ত ভোগের কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুই কারণে পরিবেশ দূষিত হয়। মানুষ দ্বারা সৃষ্ট এ দূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই।

