প্রকাশিত হয়েছেঃ আগস্ট ৬, ২০২৫ সময়ঃ ৭:৪৭ অপরাহ্ণ

বিল পরিশোধ করতে না পারায় হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে আনতে পারছেন না অসহায় স্ত্রী নাছরিন সুলতানা মুক্তা। নিরুপায় হয়ে পোশাককর্মী স্বামী হেলাল উদ্দিনকে (৪০) বাড়ি আনার জন্যে সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে দেশের বিত্তবান ও পরোপকারীদের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। হেলাল উদ্দিন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ভরাডোবা ইউনিয়নের রাংচাপড়া গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে।
ভালুকা প্রেসক্লাবে এসে নাছরিন সুলতানা মুক্তা জানান, তার স্বামী মো. হেলাল উদ্দিন মাওনা এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। স্বামীর আয় ও নিজের টিউশনির টাকায় কায়ক্লেশে চলছিলো তাদের সংসার। তাদের দুই ছেলে। বড় ছেলে মো. মাহফুজুর রহমান পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ও ছোট ছেলে মো. মাহমুদুল হাসান স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। সম্পদ বলতে তাদের ভিটের বাড়ির ১৭ শতক জমি। এদিকে, গত ১১ জুলাই কারখানায় কর্মরত অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন মো. হেলাল উদ্দিন। তাঁকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে আইসিও’তে নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু হাসপাতালের আইসিও’র বেড খালি না থাকায় দিশাহীন মুক্তা স্বামীকে বাঁচানোর জন্যে ময়মনসিংহ শহরের একটি বেসরকারী ক্লিনিকে নিয়ে যান এবং অগ্রিম টাকা জমা দেয়া ছাড়াই ক্লিনিকের আইসিওতে ভর্তি করেন। তিনি সেখানে তিনদিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। এর পর তাকে এসডিও’তে রাখা হয়। একপর্যায়ে তিনি সুস্থ্য হয়ে উঠেন এবং ক্লিনিকে ভর্তির ১০ থেকে ১১ দিন পর বাড়ি ফেরার উপযোগি হয়ে উঠেন। কিন্ত ক্লিনিকের আইসিও বিল পরিশোধ করতে না পারায় স্বামীকে বাড়ি আনতে পরছেন না মুক্তা। ক্লিনিকের বিল পরিশোধের টাকা দ্রুত সময়ে সংগ্রহ করতে পরছেন না, এমনকি তিনি ভিটে বাড়ি বিক্রি করতেও পারছেন না। পারছেন না সুদে টাকা সংগ্রহ করতে। এ অবস্থায় টাকার জন্যে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। এদিকে হেলাল উদ্দিনের আগের ক্লিনিক বিলের সাথে এখন প্রতিদিন এক হাজার ৫০০ টাকা করে যুক্ত হচ্ছে। মুক্তা বলেন, ‘অতিকষ্টে বিভিন্ন জনের নিকট থেকে ধারদেনা করে স্বামীর ঔষধের টাকার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। এখন টাকার অভাবে স্বামীকে হাসপাতাল থেকে আনতে পারছি না। হাসপাতাল থেকে স্বামীকে বাড়ি আনতে আমি দেশের বিত্তবানদের সহায়তা কমনা করছি।’
ওই ক্লিনিকের আইসিও ম্যানেজার মনির জানান, মানবিক দিক বিবেচনায় হেলাল উদ্দিনকে আইসিও’তে ভর্তির সময় অগ্রিম কোন টাকা নেয়া হয়নি। রোগী সুস্থ হওয়া পর্যন্ত বিল হয়েছিল এক লাখ ৫৪ হাজার টাকা। এখন প্রতিদিন এক হাজার ৫০০ টাকা করে বিল বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী টাকা সংগ্রহের কথা বলে বলে সময় নিচ্ছেন। কিন্তু এপর্যন্ত কোন টাকাই জমা দেননি। উনি টাকা নিয়ে আসলে মানবিক বিষয়টি পরে দেখা যেতো।