প্রকাশিত হয়েছেঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪ সময়ঃ ৯:৪৯ পূর্বাহ্ণ

Spread the love
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি।।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, ভালুকা-২ এর আওতায় দশমিক ৬৯ কিলোমিটার নতুন লাইন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তথ্য গোপন করে সিঙ্গেল ফেইজের একটি আবাসিক লাইন থ্রিফেইজে উন্নীত করে নির্মানাধিন কারখানায় নেয়া হচ্ছিলো। ইতোমধ্যে খুঁটি স্থাপন করে সঞ্চালন লাইনের তার টানার ৬০ ভাগ কাজ শেষও করা হয়। পরে অনিয়মের বিষয়টি টের পেয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ চলমান কাজটি বন্ধ করে দেয়। দায়িত্বে অবহেলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ওই কাজের ডিজাইন ও সুপারভিশনের দায়িত্বে থাকা দুই প্রকৌশলীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, ভালুকা প্রধান কার্যালয় ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত তিন মাস আগে একটি প্যাকেজের আওতায় পাশের শ্রীপুর সাবস্ট্যাশনের কাওরাইদ ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে দশমিক ৬৯ কিলোমিটার সিঙ্গেল ফেইজ থেকে থ্রিফেইজে উন্নীত করার লক্ষে বিদ্যুৎ লাইনের টেন্ডার দেয়া হয়। কাজের ডিজাইন ও নক্সাসহ সার্বিক কাজ শেষ করে ওই লাইনটির কার্যাদেশ পান জনৈক ঠিকাদার আবু সাইদ এবং ইতোমধ্যে পাঁচটি খুঁটি স্থাপন করে নির্মাণ কাজের (লট নম্বর-২৪২০৯) ৬০ ভাগ শেষও হয়। গত ২০ দিন আগে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ময়মনসিংহ-২ এর জেনারেল ম্যানেজার মো: আকমল হোসেন সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়মের অভিযোগে নির্মাণকাজটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
অভিযোগে জানা যায়, ওই এলাকায় একটি প্রস্তাবিত কারখানার নির্মাণ কাজ চলছে। ওই কারখানায় পল্লী বিদ্যুৎ লাইন নেয়ার জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু পরবর্তিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আর যোগাযোগ করেননি। তবে ওই কারখানার পক্ষে একটি চক্র তথ্য গোপন করে আবাসিক কিছু গ্রাহক দেখিয়ে ওই লাইনটি নেয়ার চেষ্টা চালায়। যদিও ওই এলাকায় অনেক আগেই পল্লী বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে এবং গ্রাহকরা ব্যবহার করছেন। থ্রিফেইজের লাইনটি নিতে পারলে ওই চক্রটি মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধা পাবে এবং ওই কারখানায় লাইন নিতে খরচ কমে যাওয়াসহ সহজেই বিদ্যুৎ লাইনটি পেয়ে যাবে। এই কাজের সাথে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, ভালুকা-২ অফিসের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত রয়েছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এমনকি খোঁজ নিলে ওই সমিতির আওতায় এ ধরণের আরো একাধিক ঘটনা থাকতে পারে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, কাজটি বন্ধ করে দেয়ার পর থেকে ওই চক্রটি উঠে পড়ে লেগেছেন এবং পল্লী বিদ্যুতের কতিপয় অসাধূ লোকদের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে অনিয়মত্রান্তিকভাবে স্থাপিত খুঁটিগুলো ঠিক রেখে পূণরায় লাইনটি শতভাগ করে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে অনিয়মত্রান্তিকভাবে কাজ করার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওই কাজের ডিজাইন প্রকৌশলী মোতালেব হোসেন ও সুপারভিশন প্রকৌশলী আলমগীর হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন।
ওই কাজের ঠিকাদার আবু সাইদ জানান, কাজটির সার্বিক নিয়ম মেনেই এমনকি প্রতিটি কাগজেই জিএম আকমল হোসেনের স্বাক্ষর ও সিলমোহর রয়েছে। কিন্তু ৬০ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর হঠাৎ করে রহস্যজনক কারণে তিনি পরিদর্শনে গিয়ে কাজটি বন্ধ করে দিয়েছেন।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ভালুকা-২ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো: আকমল হোসেন জানান, তথ্য গোপন করে অনিয়মত্রান্তিকভাবে কাজটি করা হচ্ছিলো এবং তা পাঁচটি খুঁটি স্থাপনের কাজ শেষ করে তিনটিতে লাইন টেনে ৬০ ভাগ কাজ হয়ে গেছে। যা তিনি অভিযোগের ভিত্তিতে পরিদর্শণে গিয়ে জানতে পেরেছেন এবং কাজটি সম্পূর্ণ হলে তার চাকরী চলে যেতে পারতো। তাই তিনি চলমান কাজটি বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া ওই কাজে জড়িত থাকার দায়ে দুইজন কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো বলেন, নির্মানাধিন কাজের খুঁটিসহ সার্বিক জিনিসপত্র ক্লোজ করে নিয়ে আসা হবে এবং পরবর্তিতে সম্ভব হলে পূণরায় টেন্ডারের মাধ্যমে ওই লাইনটি করা হতে পারে।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com