প্রকাশিত হয়েছেঃ ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪ সময়ঃ ৮:৩৪ অপরাহ্ণ

মোঃ জাকির হোসেন, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি।।

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম বলেছেন, কীভাবে সাংবাদিকতার মান উন্নয়ন করা যায়, অপসংবাদিকতা রোধ করা যায়, এটা থেকে মূলধারার সাংবাদিকদেরকে কীভাবে বাঁচাতে যায়, সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে। সাংবাদিক সমাজ দেশের জন্য যেন আরো ভালোভাবে কাজ করতে পারে তারজন্য সঠিক তালিকা প্রণয়ন খুবই জরুরি।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ‘গণমাধ্যমে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা’ শীর্ষক সেমিনার ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ কনফারেন্স রুমে এই সেমিনার ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল।

জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহফুজুল আলম মাসুম এর সভাপতিত্বে সেমিনার ও মতবিনিময় সভায় প্রেস কাউন্সিলের সচিব (অতিরিক্ত সচিব) শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, পুলিশ সুপার প্রতিনিধি ময়মনসিংহ সদর রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইঞ্জি.মো: শাহিনুল ইসলাম ফকির, জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক শেখ মোঃ শহীদুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

উপস্থিত গণমাধ্যম ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি আরো বলেন, ময়মনসিংহের সাংবাদিকতা অনেক উন্নতমানের। তারপরও সারা দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় ময়মনসিংহ থেকেও আপনাদের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৩৪টি জেলার তথ্য পেয়েছি। প্রিন্ট মিডিয়ার তালিকা আমরা তৈরি করছি। টেলিভিশন মিডিয়ার তালিকা প্রণয়নে পিআইডি ও পিআইবি এর সাথে সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি। ডিএফপি, মালিকপক্ষ, সাংবাদিকগণসহ আরো অনেকের সাথে আমরা বসেছি। যাতে করে একটি নির্ভরযোগ্য তালিকা পেতে পারি। তাতে করে সাংবাদিকরাও জানবে প্রকৃতপক্ষে সারা দেশে কতজন সাংবাদিক আছেন। যোগ্য সাংবাদিক বাছাইয়ে গ্র্যাজুয়েট, সাংবাদিকতায় ৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিথিলযোগ্য শিক্ষাগত যোগ্যতা, নিয়োগপত্রে বেতনভাতা উল্লেখ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য থাকা অত্যাবশ্যক বলে মনে করেন তিনি। অপসংবাদিকতার হাত থেকে বাঁচতে নীতিমালাতে আরো অনেক কিছু সংযোজনের প্রয়োজনীয়তা বলে মন্তব্য করেন প্রধান অতিথি।

স্বাগত বক্তৃতায় শেখ মোঃ শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়নে প্রেস কাউন্সিলের গুরুত্ব তুলে ধরেন। এ ধরনের আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এ সময় মুক্ত আলোচনায় সাংবাদিকবৃন্দ ও বক্তারা বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল, সরকার, প্রশাসন, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা মিলে অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধ করে সাংবাদিকতার মান উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

আলোচনায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অমিত রায় বলেন, নামে-বেনামে, অপসংবাদিকতা উত্তরণে আপনাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা কামনা করি। সাংবাদিকদের একটি নির্ভেজাল আপডেট তালিকা প্রণয়ন করতে বাঁধা কোথায় এটা আমার বোধগম্য নয়।  আমরা যারা মূলধারায় সাংবাদিকতা করি তারা যেন সম্মানের সহিত সাংবাদিকতা করতে পারি সে আহ্বান জানাই আপনাদের প্রতি। পরিবার পরিজনের কাছে পরিচয় দিয়ে আমরা যেন এ পেশায় নিয়োজিত থাকতে পারি। সাংবাদিকতার পরিচয় সংকট উত্তরণে আপনারা দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করি।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ও ময়মনসিংহ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মীর গোলাম মোস্তফা জানান, সাংবাদিকতায় মানদন্ড নির্ধারণে একটা আদর্শ মেনে চলা উচিত। যৌথ কমিটির মাধ্যমে তালিকা প্রণয়ন করা উচিত। ডিক্লেয়ারেশনের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পর্যায়ে জেলা প্রশাসনের আরো নজরদারি বাড়ানো উচিত বলে জানান তিনি।

ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন,  হলুদ সাংবাদিকতা বা অপসংবাদিকতা হতে আমরা মূলধারার সাংবাদিকরা আলাদা হতে চাই। সাংবাদিকতার পেশাকে সম্মানের সহিত বাঁচিয়ে রাখতে অসুস্থ সাংবাদিকতা থেকে দূরে থাকতে হবে সবাইকে। একটি সুষ্ঠু তালিকা প্রণয়নে আর কতদিন লাগবে, সেটা জানি না। তবে আমরা চাই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা বাস্তবায়ন হোক। বন্ধ হোক অপসংবাদিকতা।

মুক্ত আলোচনায় আরো অনেক সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ অংশ নেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার বলেন, আমি মনে করি  কেন্দ্রের চাইতে আঞ্চলিক বা মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিকদের অবদান বেশি। কিন্তু প্রাপ্যতা ততটা নেই। সাংবাদিকতা একটি চ্যালেজ্ঞিং পেশা। সাংবাদিকদের পরিচয় সংকট দূর করতে প্রেস কাউন্সিল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহফুজুল আলম মাসুম বলেন, ময়মনসিংহ জেলার সাংবাদিকতায় সরকারের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ময়মনসিংহ জেলা প্রেসক্লাব এর সভাপতি জেলা প্রশাসক মহোদয় নিজেই। এ জেলার সাংবাদিকতা পেশার ক্ষেত্রে যতটুকু করা দরকার সর্বোচ্চটা করবো, সে প্রতিশ্রুতি সাংবাদিক মহলকে দিতে পারি। আজকের সেমিনার ও মতিবিনয় সভার কী ওয়ার্ড হচ্ছে সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন। এটা একটু কঠিন কাজ বলে মনে করি। আগাছার মত দু’ একটা অপসংবাদিক তালিকায় ঢুকে যেতে পারে। তাতে পুরো তালিকার গুণাগুণ নষ্ট হওয়ার কথা নয়। তারপরও একটি নির্ভরযোগ্য খাঁটি তালিকা প্রণয়নে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবো।

মতবিনিময় সভায় আঞ্চলিক তথ্য অফিস (পিআইডি) ময়মনসিংহের কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত ৪০জন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com