প্রকাশিত হয়েছেঃ আগস্ট ৮, ২০২৩ সময়ঃ ৬:৩১ অপরাহ্ণ

মোঃ জাকির হোসেন, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি।।

“সংগ্রাম স্বাধীনতা প্রেরণায় বঙ্গমাতা” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক ময়মনসিংহ জেলার কর্মক্ষম অথচ অসহায় ও অসচ্ছল মহিলাদের মধ্যে ১০৫টি সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। এ দিনটিকে কেন্দ্র করে সারা দেশের ন্যায় ময়মনসিংহেও দিনভর নানামুখী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১১ টায় নগরীর জেলা পরিষদের ভাষা শহিদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আলোচনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া।

বঙ্গমাতার জন্মদিবস পালনের তাৎপর্য তুলে ধরে প্রধান অতিথি বলেন, যে পুরুষকে তার স্ত্রী আগায় দেননি সে পুরুষের দ্বারা সফলতা অর্জন করা কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু জাতির পিতার ভাগ্যে এমন এক মহীয়সী নারী এসেছিল যার প্রেরণায় বঙ্গবন্ধু তাঁর কাজের সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে ছিলেন। এ দেশের প্রতিটি সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর সফল হওয়ার নেপথ্যে ঘরের যে মানুষটি শক্তি যোগীয়েছিল সে আর কেউ নয়, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর আন্দোলনে একটি দেশের সৃষ্টি। এ আন্দোলন সংগ্রামকে বেগবানে ও উদ্দীপনার আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন এই নারী। স্বামীকে জেল হতে মুক্তি দিতে চাইলেও অসম্মানজনক কাজ হবে বলে বঙ্গবন্ধুর সাথে একমত হননি তিনি। বরং প্যারোলে জেল থেকে মুক্তি নিলে স্বামীর বিরুদ্ধে রাস্তায় আন্দোলনে নামবে বলে জানিয়ে দেন বঙ্গমাতা। জেলে বসে বঙ্গবন্ধুর লেখার পিছনে উৎসাহ জুগিয়েছেন, নিজের পয়সা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে বই কিনে দিয়েছেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু হতে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছেন বঙ্গমাতা। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ সৃষ্টিতে বঙ্গমাতা বলেছিলেন, দেশকে নিয়ে দেশের মানুষকে নিয়ে যা ভাবছো, তোমার ভেতরে যা আছে, সেটাই তুমি প্রকাশ করবে। সত্যিই লিখিত কোনো রূপ ছিল না এ ভাষণের। বাঙ্গালির মুক্তির প্রেরণা এ ভাষণের পেছনে বঙ্গমাতার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

বঙ্গবন্ধু তার আত্মজীবনীর প্রথম পাতা শুরু করেছিলেন সঙ্গী সহধর্মিণীর কথা দিয়ে। কেননা বেগম মুজিবের তাগিদেই এ প্রজন্মের বাঙালি আজ হাতে পেয়েছে স্বাধিকার আন্দোলনের এক অমূল্য দলিল।

এদিবস পালনের গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, বঙ্গমাতা, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এই তিনটি শব্দকে কখনোই বিচ্ছিন্ন করা যায়না। পৃথিবীতে অনেক জাতি আছে যারা স্বাধীন হওয়ার জন্য যুগের পর যুগ চেষ্টা করছে। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জন করতে পারেনি। মাত্র ২৩ বছরে একজন মহান নেতার নেতৃত্বে। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। যে নারীর চেতনা, উৎসাহ, প্রেরণায় বঙ্গবন্ধু আমাদের মুক্তি এনে দিয়েছিলেন সেই মানবীয় মহীয়সী নারী হচ্ছেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। দেশের প্রতি যার ছিল আশ্চর্য রকম দরদ। বঙ্গমাতার অবদান ও আদর্শকে আমাদের স্বীকার করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অন্যান্য বক্তারা বলেন, রেনু থেকে বেগম মুজিব হয়ে ওঠা; জাতির পিতা জাতির পিতা হয়ে ওঠা এসবকিছুতে বঙ্গমাতার ছোঁয়া। রাজনৈতিক আশ্রয়, ক্রান্তিকালে দল পরিচালনায় অবদান, জেলখানায় নেতাদের সহযোগিতা, এসবও এ নারীর জীবনীতে খুঁজে পাওয়া যায়।

এ লক্ষ্যে সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু নাম নয় এটি একটি দেশ। এদেশের পেছনে যিনি একাধারে একজন মা, গৃহিণী রাজনৈতিক উত্তম সহচর, দলের প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন তিনি হচ্ছেন এই বঙ্গমাতা নারী বেগম ফক্তিলাতুন নেছা মুজিব। জাতির পিতার মূল শক্তির প্রেরণা তিনি।

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে কর্মক্ষম অথচ অসহায় ও অসচ্ছল মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। এ অঞ্চলের ৩০০ জন অসচ্ছল নারীকে মাসে ২০০ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। ময়মনসিংহ জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজনীন সুলতানা।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ এহতেশামুল আলম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল।

আলোচনা সভায় বিভাগীয় ও জেলার পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, নারী উদ্যোক্তা, উপকারভোগী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com