প্রকাশিত হয়েছেঃ জুলাই ৩০, ২০২৫ সময়ঃ ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

Spread the love

আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ)।।
ময়মনসিংহের ভালুকায় লোহার গেইট দিয়ে একটি সরকারী রাস্তা বন্ধসহ সংরক্ষিত বনবিভাগের জমি দখলে নেয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কয়েক গ্রামের জনসাধরণসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ঘটনায় নির্বাহী অফিসারসহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সরেজমিন স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের আমতলী থেকে মনোহরপুর রাস্তার কামিনি ভিটা এলাকায় হবিরবাড়ি কৃষি খামার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাশে শামীমান নাসরিন নামে ঢাকার এক প্রভাবশালী লোহার গেইট দিয়ে সরকারী রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে মনোহরপুর ও বারশ্রীসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, আমতলী থেকে মনোহরপুর রাস্তার কৃষি খামার সরকারী প্রাথমিক স্কুলের পূর্বপাশ দিয়ে মনোহরপুর রাস্তার দুই কিলোমিটার সড়কে তিনি বেশ কয়েকবার কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ও টিআর প্রকল্পের বরাদ্দ দিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু ঢাকার একজন প্রভাবশালী ওই মহিলা এলাকাবাসির বাঁধা দেয়ার পরও জোরপূর্বক রাস্তাটির মুখে লোহার গেইট দিয়ে রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে কয়েক গ্রামের মানুষসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। তিনি প্রশাসনের কাছে রাস্তা থেকে লোহার গেইটটি অপসারণের দাবি জানান।
সাবিনা আক্তার নামে স্থানীয় একজন মহিলা জানান, ঢাকার প্রভাবশালী মহিলা হবিরবাড়ি মৌজার ৭৭১ ও ১১০ নম্বর দাগে ১৯৯৭ সালে স্থানীয় কবির হায়াত খানের কাছ থেকে ৮৫ শতাংশ ও ১৯৯৯ সালে সাজ্জাত হায়াত খানের কাছ থেকে ৫০ শতাংশসহ বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে দেড় একর জমি ক্রয় করে ১৭/১৮ একর জমি জোরপূর্বক দখলে নেয়ার পাঁয়তারা করছেন। অথচ ওই দুই দাগের বেশিরভাগ জমিই বন বিজ্ঞপ্তিত। এমনকি সরকারী রাস্তার মুখ বন্ধ করে যে লোহার গেইটটি বসানো হয়েছে, তাও বনভূমির উপর স্থাপন করা হয়েছে এবং স্থানীয় বনবিভাগের লোকজন একবার লোক দেখানো গেইটটি কিছু অংশ সড়িয়ে রহস্যজনক কারণে তেমন কোন আইনী ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি গেইটটি জব্দও করেনি। ফলে আসামীরা সাথে সাথেই জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। এব্যাপারে বনবিভাগের লোকদের জিজ্ঞাস করলে, তারা জানান, দখলকারী ওই মহিলার হাত অনেক লম্বা, তাই কিছু করা যাচ্ছেনা। এব্যাপারে তিনি নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছন বলে জানান।
হবিরবাড়ি কৃষি খামার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা সুলতানা জানান, তিনি ২০০৯ সাল থেকে ওই স্কুলে চাকরী করে আসছেন। কোম্পানী কর্তৃক লোহার গেইট দিয়ে ওই রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ায়, শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়া করতে সমস্যা হচ্ছে, এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন তার স্কুলের অর্ধশতাধিক ছাত্রছাত্রী আসা যাওয়া করে থাকে। তিনি বন্ধ রাস্তা খুলে দেয়ার দাবি জানান।
কোম্পানীর দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেন জানান, তাদের এইখানে ১৮ একর জমি রয়েছে, এখানকার কিছু জমিতে বনবিভাগের দাবি থাকলেও চেষ্টা করা হচ্ছে বনবিভাগের সাথে সীমা নির্ধারণ (ডিমারগেশন) করে নেয়ার জন্য। আর রাস্তার ব্যাপারে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে প্রজেক্টের দক্ষিণ পাশ দিয়ে আরেকটি রাস্তা কোম্পানীর পক্ষ থেকে করে দেয়া হয়েছে।
ভালুকা রেঞ্জ কর্মকর্তা হারুন উর রশিদ খান জানান, সাইবোর্ড বিহিন ওই কোম্পানী দেড় একর জমি ক্রয় করে বনবিভাগের ৭৭১ ও ১১০ নম্বর দাগে বেশ কিছু জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা করছে, এমনকি একটি বিশাল আকারের লোহার গেইট স্থাপন করলে আমরা তা উপড়ে ফেলি। ওই সময় ৫ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com