প্রকাশিত হয়েছেঃ জুলাই ১৫, ২০২৫ সময়ঃ ৯:১৮ অপরাহ্ণ
আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ)।।
ময়মনসিংহের ভালুকায় দুই শিশু সন্তানসহ গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামী নিহত গৃহবধুর দেবর নজরুল ইসলামকে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে মডেল থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেলে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির একটি দলের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে রেলস্টেশনের এক নম্বর প্লাটফর্মের ওভারব্রীজের নীচ থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে গাজীপুর থেকে ভালুকায় থানার নিয়ে আসা হয়।
জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ নাদির উজ জামান জানান, প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃত নজরুল। তবে কি কারনে হত্যা করেছে তা জানা যায়নি।
গত রোববার রাতে ভালুকা উপজেলা সদরের টিএন্ডটি রোডের একটি বাসায় গৃহবধূ ময়না বেগম এবং তার সাত বছরের কন্যা রাইসা জান্নাত ও দুই বছরের ছেলে নিরবকে গলাকেটে হত্যা করে গৃহবধূর দেবর নজরুল ইসলাম। এ ঘটনায় ময়নার বড় ভাই জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে তার ছোট ভাই নজরুল ইসলাম প্রধান আসামী করে অজ্ঞাত আরো ১/২ জনের নামে ভালুকা থানায় হত্যা মামলা (নম্বর-২৫) দায়ের করেন।
পুলিশ ও নিহত ময়না বেগমের স্বামী রফিকুল ইসলাম জানান, প্রায় দেড় মাস আগে ময়মনসিংহের ভালুকা পৌরসভার টিএন্ডটি রোডে একটি বাসা ভাড়া নেন পোশাক শ্রমিক রফিকুল ইসলাম। সঙ্গে ওঠেন স্ত্রী ময়না বেগম, মেয়ে রাইসা, ছেলে নিরব ও ছোটভাই নজরুল ইসলাম।
অন্যান্য দিনেরমতো রোববার নাইট শিফট থাকায় রাতে কাজে যান রফিকুল। সকালে বাসায় ফিরে বাইরে থেকে ঘরে তালা দেখতে পান তিনি। অনেক ডাকাডাকির পর ভেতর থেকে কোন সারা না পাওয়ায় প্রতিবেশীদের সহায়তায় তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে, খাটের ওপর স্ত্রী ও সন্তানদের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন রফিকুল। পরে ঘটনাস্থল আসেন পুলিশ, পিবিআই, র্যাব ও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা।
এ ঘটনার পর রফিকুলের ছোট ভাই নজরুল ইসলাম পালিয়ে যায়। তবে, তার রুম থেকে উদ্ধার করা হয় রক্ত মাখা দা ও পোশাক। সে আরো একটি হত্যা মামলার আসামি বলে জানায় পুলিশ।
উল্লেখ্য, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কীত্তনখোলা সেনের বাজার এলাকার সন্তু মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম স্ত্রী ময়না আক্তার, দুই সন্তান রাইসা (৭) ও নিরব (২) এবং ছোট ভাই নজরুল ইসলামকে নিয়ে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড পনাশাইল রোড হাইয়ূমের বাসা ভাড়ায় থেকে স্থানীয় রাসেল স্পিনিং কারখানায় চাকরী করে আসছিলেন। সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল ৯ টার সময় কর্মস্থল থেকে রফিকুল ইসলাম বাসায় গিয়ে দেখেন গেইটের দরজায় তালা ঝুলানো। এ সময় ডাকাডাকি করা হলেও ঘরের ভেতর থেকে কোন সাড়া মেলেনি। পরে তালা ভেঙে ভেতরে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। খবর পেয়ে মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে। ###