প্রকাশিত হয়েছেঃ মার্চ ১৯, ২০২৫ সময়ঃ ৫:২৫ অপরাহ্ণ
আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ)।।
ময়মনসিংহের ভালুকা ও উথুরা রেঞ্জের আওতায় ৬ টি বিট ও একটি ক্যাম্পের আওতায় বনবিভাগের জমি দখলে নিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মাঝে বেশ কয়েকটি বহুতল ভবনও রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বনবিভাগের অসাধূ ব্যক্তিদের সাথে অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমেই এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে বনবিভাগের দাবি এ সব অবৈধ স্থাপনার বিষয়ে একাধিক মামলা দেয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে ও বিভিন্ন এলাকার লোকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভালুকা রেঞ্জের হবিরবাড়ি বিটের আওতায় হবিরবাড়ি মৌজা সিএস ১৮৫ নম্বর দাগে সিডস্টোর উত্তর বাজার এলাকায় মজিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি পাঁচ তলা ফাউন্ডেশন বাড়ির কাজ করছেন, একই দাগে, খানকা ঘরের দক্ষিণ পাশে বনবিভঅগের জমিতে আজিজ নামে এক ব্যক্তি বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। ১৫৪ দাগ নম্বর দাগে আমতলী মোড় জব্বার মার্কেট এলাকায় বুলবুল মাস্টার নামে এক ব্যক্তি পাঁচ তলা বাড়ি করছেন, এই দাগেই বাংলা বিল্ডিং করছেন রবি নামে আরেক ব্যক্তি। ১৮৭ নম্বর দাগে লবণকোঠা এলাকায় আবুল হাশে ওরফে হাসু বেশ কয়েখটি পাকা ঘর নির্মাণ করছেন। আওলাতলী রোড হবিরবাড়ি মৌজা ৯ নম্বর দাগে খলিলুর রহমান ৫ তলা বাড়ি করছেন, একই দাগে সুরুজ ড্রাইভার নামে এক ব্যক্তি ৪ তলার ছাদ ঢালাই করছেন,
সিডষ্টোর ঝালপাজা সড়কে ১৮৫ নম্বর দাগে ৫ তলা বাড়ি করছেন শিখা নামে এক মহিলা, একই দাগে বহুতল ভবন করছেন শরীফ নামে এক ব্যক্তি, তাছাড়া ধামশুর মৌজার ৯৬৬ নম্বর দাগে দৃশ্যমান বিপুল পরিমান গজারী গাছসহ বনবিভাগের জমি দখল করে হ্যামস ফ্যাশন লিমিটেড সীমানাপ্রচীর নির্মান করছে। জব্বারের মোড়ের পূর্বপাশে, মাজারের দক্ষিণে জাফর নামে এক ব্যক্তি বিশাল বাড়ি করছেন, সিডষ্টোর উওর বাজর কাজী অফিস গলির রোডে ১৮৫ নম্বর দাগে আলাল মেকার নামে এক ব্যক্তি বাড়ি করছেন, একই দাগে ফালু সরকারের ভাই বাড়ি নির্মান করছেন, একই দাগে ১০ তলা ফাউন্ডেশন বাড়ি করছেন সালাউদ্দিন, তাছাড়া আল মদীনার উত্তর পাশে ৯ নম্বর দাগে নাসির গøাসের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মহসীন হোসেন বহুতল বাড়ি নির্মাণ করছেন, একই দাগে রবি নামে এক ব্যক্তি বাড়ি নির্মান করছেন, ইটালী মাঠের পশ্চিমে রাস্তার দক্ষিণ পাশে জবান আলী বাড়ি করছেন, এদিকে কাঠালী মৌজার ১০৭ নম্বর দাগে সুনিল ও উত্তম নামে দুই ব্যক্তি ২০ টি পাকা ঘর নির্মান করছেন, একই দাগে আনাস খান করছেন কয়েকটি ইটের ঘর, স্থানীয় ব্র্যাকের বাগানে ১০০ নম্বর দাগেও স্থাপনা করা হচ্ছে এবং কাঠালী কানার মার্কেট এলাকায় ২৪২ নম্বর দাগে আমির আলী মৃধার ছেলে নাঈম বাড়ি নির্মাণ করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, হবিরবাড়ি বিট অফিসার আনোয়ার হোসেন খান ভালুকা রেঞ্জের কাদিগড় বিটে দীর্ঘদিন দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অতিরিক্তি হবিরববাড়ি বিটেরও দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কাদিগড় বিটে থাকা অবস্থায় তিনি অনেক অনিয়ম করেছেন। এ কখর তিনি হাবিরবাড়ি বিটের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বনবিভাগের জমি দখলে নিয়ে বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন ধরেণের স্থাপানা নির্মাণে হিড়িক পড়েছে। আর এসব স্থাপনা নির্মাণে বিট অফিসার আনোয়ার হোসেন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। কারণ অনেক সময় দেখা গেছে রাজমিস্ত্রীর সাথে বসেও আড্ডা দিচ্ছেন এবং তাদের মাধ্যমেই অনৈতিক সুবিধা আদায় করে থাকেন।
এদিকে উথুরা রেঞ্জের আওতায় একাধিক স্থাপনা নির্মানের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, ওই রেঞ্জার কৈয়াদি গ্রামের কায়নার নামক স্থানে জনৈক ওয়াজেদ মিয়া বনবিভাগের প্রায় ৩০ শতক জমি দখলে নিয়ে পোল্ট্রি খামারের জন্য বিশাল সেডঘর নির্মান করছেন, একই মৌজার কাঠ ব্যবসায়ী হুমায়ূনের বাড়ির পর্বপাশে কালাম নামে এক ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণসহ বহু বাড়ি ঘর নির্মান করা হচ্ছে। তাছাড়া ওই রেঞ্জের আঙ্গারগাড়া বিটে বহু বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
এদিকে উথুরা রেঞ্জের আওতায় এনায়েতপুর বিটে কাহালগাও গ্রামে ১৯৭ নম্বর দাগে নজরুল ইসলাম ও নাছির উদ্দিন নামে দুই ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণ করছেন। তাছাড়া মামলা চলামান থাকার পরও ওই দাগে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করছেন। অভিযোগ রয়েছে, বিট অফিসার ইসমাইল হোসেনের সাথে যোগসাজক করে ও অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে প্রায় ১৫ পকপল ২০ টির উপরে বিভিন্ন ধরণের স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এ ব্যাপারে ভালুকা রেঞ্জের দায়িত্বে থাকা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) ইব্রাহিম সাজ্জাদ ও উথুরা রেঞ্জ কর্মকর্তা আ.ছ.ম রিদুয়ান অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে জানান, ওইসব ঘটনায় একাধিক মামলা দেয়া হয়েছে এবং বেশ কিছু মামলা প্রক্রিয়াধিন।