প্রকাশিত হয়েছেঃ এপ্রিল ৯, ২০২৪ সময়ঃ ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

Spread the love
আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ)।।
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মেদুয়ারী ইউনিয়নের বগাজান গ্রামের রাইসমিল মালিক আব্দুস সাত্তারের মেয়ে হাফসা আক্তার ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে মানবিক বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেলেও দারিদ্রতার কারণে অর্থাভাবে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও হাফসা আক্তার জাহাঙ্গীর নগর ও রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়েও ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, আব্দুস সাত্তার ও নাজমা আক্তার দম্পত্তির তিন কন্যার মাঝে বড় মেয়ে হাফসা আক্তার। তাছাড়া  তার মেঝো বোন সুমাইয়া আক্তার (১২) শারীরিক ও বাক প্রতিবন্ধী এবং জান্নাতুল ফেরদৌসী (৫) নার্সারীতে পড়ে। জান্নাতুল ফেরদৌসীও বেশ মেধা সম্পন্ন। মা নাজমা আক্তার এক সময় গার্মেন্টে চাকরি করতেন। প্রতিবন্ধী সোমাইয়াকে দেখা শোনার কেউ না থাকায় গামের্ন্টের চাকুরি ছেড়ে দেন। সামান্য রাইস মিল চালিয়ে আব্দুর সাত্তার পাঁচ সদস্যের সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন। রাইস মিল বছরের বোরো ও আমন মওসুমে চাল ভাঙার কাজ থাকলেও বাকী সময় অলস সময় কাটাতে হয় আব্দুস সাত্তারকে।
দারিদ্রতারকে হার না মানা হাফসা শিশুকাল থেকে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে বগাজান গ্রামের এনজিওদের প্রতিষ্ঠান এডুকো শিক্ষালয় থেকে ২০১৫ সালে পিএসসি, লোহাবৈ আব্দুল হেকিম সরকার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি ২০১৮ ও ২০২১ সালে এসএসসিসহ তিনটি পরীক্ষাতেই গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে। এসএসসি পরীক্ষায় ময়মনসিংহ বোর্ডে ষষ্ঠ স্থান দখল করে স্কলারশিপ পেয়েছে। এছাড়াও পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় বৃত্তি পেয়েছে।
হাফসা আক্তার জানান, বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় সরকারী ভাবে প্রাপ্ত বই ও শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়ে লেখাপড়া করেছেন। বিনা বেতনে শিক্ষকগণ তাকে প্রাইভেট পড়িয়েছেন। বাবা একজন রাইস মিল চালক সেখানে থেকে যে টাকা উপার্জন হতো তাদের সংসার চালিয়ে তার পড়ালেখার খরচ চালাতে পাড়তেন না। বৃত্তি, এসএসটি স্কালারশীপের টাকা দিয়ে পড়ালেখার চালিয়েছেন। এসএসসি পর্যন্ত বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করলেও অর্থাভাবে তিনি এইচএসসিতে ময়মনসিংহ মুমিনুন্নিছা সরকারী মহিলা কলেজে মানবিক শাখায় ভর্তি হন। কলেজে পড়ালেখা করার জন্য মেসে থেকে নিজে দু’টি প্রাইভেট পড়িয়ে, টিউশন ফি, বৃত্তিরটাকা ও শিক্ষকদের সহযোগিতায়  নিজের পড়ালেখা চালিয়েছেন। টাকার অভাবে তার বাবা ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকে তাকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে রাজি না হয়ে তিনি বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে এখনো পর্যন্ত সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ চালানো তার বাবার জন্য অসাধ্য হয়ে পড়েছে। অর্থাভাবে বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চতায় আছেন তিনি ও তার পরিবার। হাফসা আক্তার জানান, তিনি বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশের জন্য কিছু করতে চান।
লোহাবই আব্দুল হেকিম সরকার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিকুল ইসলাম জানান, হাফসা আক্তার খুবই মেধাবী, পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সে তার লক্ষে পৌছতে পারবে।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com