প্রকাশিত হয়েছেঃ জুলাই ১১, ২০২৫ সময়ঃ ৭:৫৪ অপরাহ্ণ
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি।।
ময়মনসিংহের ভালুকায় এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুটি চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে ছিনিয়ে নেয়া ও পরবর্তীতে সাজানো মামলায় জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ও তার পরিবার বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অভিযোগকারী মেদিলা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মো. ওয়াছিকুল আজাদ। তিনি একজন মাটি ব্যবসায়ী এবং জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল ভালুকা উপজেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
১১ জুলাই শুক্রবার বিকেলে উপজেলার মেদিলা বাজার আস্তানার মোড়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান, ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ভালুকা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সানির মোড়ে জুট ব্যবসায়ী মো. মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে আওয়ামী শ্রমিকলীগের সক্রিয় সদস্য রিপন সরকারের টাকার লেনদেন হয়। ওই সময় ওয়াছিকুল আজাদ স্বাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তবে পরবর্তীতে উক্ত ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত হলে, ২০২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি বাড়ি ফেরার পথে রিপন সরকার ও তার সহযোগীরা তাকে জোরপূর্বক মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে একটি ঘরে নিয়ে যায়।
সেখানে রিপন সরকার, তার ভাই মোখলেছ সরকার, মজনু সরকার, মোস্তফা সরকার, ভাতিজা রাকিব সরকার ও আসিফ সরকারসহ আরও কয়েকজন অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে দুটি ব্যাংকের চেকে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। চেক দুটি হলো—শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ভালুকা শাখার একটি সেভিংস অ্যাকাউন্টের চেক (নং: ৪০৩২১২১০০০০৮৮৭৯) এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক, ভালুকা শাখার একটি কারেন্ট অ্যাকাউন্টের চেক (নং: ২৩৫৬১০৩১৫)। এছাড়াও একটি ৩০০ টাকার খালি স্ট্যাম্পেও স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
ওয়াছিকুল আজাদের দাবি, পরে চেক জাল করে ৩৯ লাখ ৬ হাজার টাকা ও ৩০ লাখ ৪০ হাজার টাকার ভুয়া দাবি দেখিয়ে রিপন সরকার ও তার সহযোগী আমিনুল ইসলাম নামে একজন ব্যক্তি তার নামে মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয় মামলা দায়েরের পরও ঈদের আগে আসিফ সরকার ও তার বাবা মজনু সরকার ভালুকা বাজারের সমবায় মার্কেট এলাকায় তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং গালিগালাজ করেন।
ভুক্তভোগী মো. ওয়াছিকুল আজাদ জানান, অভিযুক্তরা তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুটি চেক স্বাক্ষর করিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া ও পরবর্তীতে ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানি করে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় তখন কিছুই করতে পারেননি। তিনি বর্তমানে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন।
তিনি প্রশাসন ও গণমাধ্যমের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, আইনানুগ ব্যবস্থা এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।