প্রকাশিত হয়েছেঃ জুন ২, ২০২৪ সময়ঃ ৮:১৭ অপরাহ্ণ
ভালুকা (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা।।
ময়মনসিংহের ভালুকায় একটি বেসরকারী হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পর ডাক্তারের অবহেলায় সুমাইয়া আক্তার (২২) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান থেকে পালিয়ে যায়। উপজেলার মাস্টারাবাড়ি এলাকায় অবস্থিত পপুলার হাসপাতালে শনিবার (১ জুন) বিকেলে ওই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর স্বজনরা অ্যাম্বলেন্স মালিক আব্দুল হালিমকে আটক করেছেন।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার মাখল গ্রামের ইসলাম মিয়া তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তারকে প্রসবব্যাথাজনিত কারণে ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় অবস্থিত মাস্টারবাড়ি পপুলার হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় অনাগত সন্তান ও মায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বলে বিকেলেই ১৬ হাজার টাকা চুক্তিতে দ্রæত সিজারিয়ান অপারেশনের পরামর্শ দিলে বিকেলে হাসপাতালের ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম রোগীকে অজ্ঞান করার পর ডাক্তার আহসান হাবিব সিজারিয়ান অপারেশন করেন এবং সহযোগীতা করেন ওটিবয় মোহাম্মদুল্ল্যাহ। এ সময় একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু ডাক্তারের ভুল অপারেশনের কারণে ওটিতেই প্রসূতি মারা যান। রোগীর অবস্থা খারাপ তাকে আইসিও সাপোর্ট লাগবে বলে রোগীর মুখে অক্সিজেন লাগিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেন। এ সময় সুমাইয়ার শ্বশুর আসাদ মিয়ার সন্দেহ হলে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে ভালুকা সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার মাসুদ পারভেজ সুমাইয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি আপষের জন্য হাসপাতাল ভবনের মালিক পল্লী পশু ডাক্তার মফিজ উদ্দিন রোগীর স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে লাশ ফ্রিজিন অবস্থায় রেখে গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত নিগুয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান তাইজুদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। মারা যাওয়া সুমাইয়ার শ^শুর আসাদ মিয়া বিষয়টি থানায় জানালে মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মারা যাওয়া প্রসূতির স্বামী ইসলাম মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারনে তার স্ত্রী মারা গেছেন। তারা এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান।
নিগুয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান তাইজুদ্দিন মৃধা জানান, হাসপাতালের ভবন মালিকসহ বিবাদীপক্ষ তার কাছে আপষের জন্য আসছিলো, কিন্তু তিনি রাজি না হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে থানায় অভিযোগ দেয়ার জন্য বলেছেন।
ভালুকা হাসপাতালের ডাক্তার মাসুদ পারভেজ জানান, সুমাইয়া আক্তারকে হাসপাতালে আনার পর ইসিজি করা হলে তাকে মৃত পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানার জন্য হাসপাতালের পরিচালক মেহেদী হাসান লিপুর মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার হাসানুল হোসেন জানান, তিনি ঘটনাটি শুনার পর স্যানেটারী ইন্সপেক্টরকে খোঁজ নেয়ার জন্য বলেছেন।
ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন আসছিলো। তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।